ভোমরা, সাতক্ষীরা (২৯ মে, ১৯৭১)
মুক্তিবাহিনী, বাংলাদেশী মুক্তিযোদ্ধারা এক ভয়ঙ্কর চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হন যখন পাকিস্তানি সেনাবাহিনী তাদের ভোমরা দুর্গে ত্রিমুখী আক্রমণ শুরু করে।
সৈন্যসংখ্যা ও অস্ত্রের দিক দিয়ে পিছিয়ে থাকার পরেও, গেরিলা কৌশল এবং ভূখণ্ডের সাথে তাদের পরিচিতিকে ব্যবহার করে নিজ অবস্থানে দাঁড়িয়ে থাকে মুক্তিবাহিনী।
যুদ্ধটি ১৬ ঘন্টা ধরে চলে, যা ছিল মুক্তিযোদ্ধা এবং সুসজ্জিত পাকিস্তানি সৈন্যদের মধ্যে এক রক্তক্ষয়ী লড়াই। এবং পুরো সময়জুড়ে ক্ষয়ক্ষতি সত্ত্বেও, মুক্তিবাহিনী ছিল দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।
ক্যাপ্টেন মাহবুব এবং ক্যাপ্টেন সালাহউদ্দিন তাদের সুবিধার জন্য ঘন গাছপালা এবং জলাভূমিকে কাজে লাগিয়ে কৌশলগত দক্ষতার সাথে প্রতিরক্ষার নেতৃত্ব দেন। মুক্তিবাহিনীর যোদ্ধারা অগ্রসরমান পাকিস্তানি সেনাদের উপর অতর্কিত গুলিবর্ষণ করে। মুক্তিবাহিনীর অস্থায়ী অস্ত্র শত্রুর উচ্চতর ফায়ারপাওয়ারের বিরুদ্ধে আশ্চর্যজনকভাবে কাজ করে যায়।
পাকিস্তানি আগ্রাসন ব্যর্থ হওয়ায় যুদ্ধটি একটি টার্নিং পয়েন্টে পৌঁছে। হতাশাগ্রস্ত এবং বিপুল হতাহতের সম্মুখীন হয়ে শেষ বিকেলে পিছু হটতে বাধ্য হয় পাক বাহিনী। এবং মুক্তিবাহিনীর জন্য নিশ্চিত হয় বিজয়।
ভোমরা বিজয় ছিল মুক্তিযুদ্ধের একটি টার্নিং পয়েন্ট। এটি বাহিনীটির শক্তি এবং অটলতা প্রদর্শন করে আমাদের যোদ্ধারা প্রমাণ করেছে যে সীমিত সম্পদের মধ্যেও স্বাধীনতার লড়াইয়ে জয়ী হওয়া যায়।
এই বিজয়ের সাক্ষী হতে পারলে কেমন হত আপনার দেয়া শিরোনাম?
১৩ অক্টোবর, ২০০৬
বাংলাদেশী অর্থনীতিবিদ এবং সামাজিক উদ্যোক্তা ডক্টর মুহাম্মদ ইউনূস, তার প্রতিষ্ঠিত গ্রামীণ ব্যাংকের সুবাদে শান্তিতে নোবেল পুরস্কারে ভূষিত হন।
তাঁর এই অর্জন শুধু বাংলাদেশের জন্য একটি উল্লেখযোগ্য বিজয়ই নয়, বরং ক্ষুদ্রঋণের মাধ্যমে দরিদ্রদের ক্ষমতায়নে ড. ইউনূসের যুগান্তকারী পরিকল্পনা সারা বিশ্বে খুলেই দেয় নতুন সম্ভাবনার দুয়ার।
ডঃ ইউনূস দারিদ্র্যের বিধ্বংসী প্রভাব প্রত্যক্ষ করেছেন যা তাকে ক্ষুদ্রঋণ বিকাশে অনুপ্রাণিত করে। তাঁর এই বৈপ্লবিক ধারণাই নারীদের ব্যবসায় শুরু করতে এবং দারিদ্র্যতা থেকে মুক্তি দিতে সক্ষম হয়েছে।
১৯৮৩ সালে তিনি গ্রামীণ ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করেন, যা সবচেয়ে দরিদ্র, বিশেষ করে মহিলাদের মাইক্রোলোন প্রদানের জন্য শুরু হয়েছিল। প্রতিষ্ঠানটির সাফল্য লক্ষাধিক মানুষের জীবনকে বদলে দিয়েছে, তাদের ক্ষমতায়ন করেছে এবং বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে অবদান রেখেছে।
এই পুরস্কারটি ক্ষুদ্রঋণের মাধ্যমে বিশ্বব্যাপি সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের সম্ভাবনার দুয়ার খুলে দেয়। ড. ইউনূসের এ অর্জন ক্ষুদ্রঋণ সম্পর্কে বিশ্বব্যাপী আলোচনার জন্ম দেয়, যার ফলে পরবর্তিতে ১০০ টিরও বেশি দেশে এর গ্রহণযোগ্যতা তৈরি হয়।
এই অর্জনটি তখন বহু বিদেশী বিনিয়োগকে আকৃষ্ট করে এবং বাংলাদেশকে বিশ্ব অর্থনীতিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে সাহায্য করেছে।
ড. ইউনূসের নোবেল শান্তি পুরস্কার জয় ব্যক্তিগত অর্জনের চেয়েও বেশি কিছু ছিল; এটি ছিল বাংলাদেশের জন্য একটি বিজয় এবং জাতির অগ্রগতি ও সম্ভাবনার প্রমাণ।
বাংলাদেশের এ বিজয়ে কেমন হত আপনার দেয়া শিরোনাম?